- বায়ুর চাপ (Air pressure) কাকে বলে ?
উঃ- সৌরজগতের গ্রহগুলির মতাো পৃথিবীও একটি গ্রহ, যা বায়ুর চাদরে মাোড়া। বায়ুর ওজন আছে, ওজনের মাধ্যমেই বায়ু পৃথিবীপৃষ্ঠে চাপ দেয়। এই চাপই হল বায়ুর চাপ। স্থান ও সময় বিশেষে এই চাপের পার্থক্য লক্ষ করা যায়।
- বায়ুপ্রবাহ (Wind flow) ও বায়ুস্রোত (Air current) কাকে বলে ?
উঃ- পৃথিবীর আবর্তনের জন্য বায়ু স্থির থাকে না। সর্বদা চলাচল করে এবং দুটো অঞলের মধ্যে চাপের পার্থক্যই বায়ু চলাচলের অন্যতম কারণ। বায়ু উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চল থেকে নিম্নচাপযুক্ত অঞ্চলের দিকে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে চলাচল করে। বায়ুর এই চলাচলকে বায়ুপ্রবাহ বলা হয়। ভূপৃষ্ঠের উপর বায়ুর উল্লম্ব চলাচলকে বায়ুস্রোত বলা হয়।
- কীভাবে বায়ুপ্রবাহের নামকরণ করা হয় ?
উঃ- বায়ু যেদিক থেকে প্রবাহিত হয় সেই দিকের না অনুসারে বায়ুর নামকরণ করা হয়। যেমন—ভারতে মৌসুমি বায়ু শীতকালে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহি হয়, তাই একে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু বলে। গ্রীষ্মকাো আবার, দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়, তা একে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বলে।
- বায়ুর চাপের পরিমান উল্লেখ করো ?
উঃ- পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বলে। বায়ুর চাপের পরিমাণ উল্লেখ করাো। বায়ুর চাপ সমুদ্রপৃষ্ঠে প্রতি বর্গসেমিতে 1013.25 মিলিবার। প্রতি বর্গইঞ্জিতে বায়ুর চাপ সমুদ্রপৃষ্ঠে 14.7 পাউন্ড।
- বায়ুচাপ বলয় (Air pressure zone) কাকে বলে ?
উঃ- অঞ্চলভেদে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে উচ্চতা, উন্নতা, পৃথিবীর আবর্তন বেগ ইত্যাদির তারতম্য লক্ষ করা যায়। এই কারণে ভূপৃষ্ঠের ওপর নির্দিষ্ট দূরত্বের ব্যবধানে যে-সমধর্মী বায়ুস্তর কয়েক হাজার কিলাোমিটার জুড়ে পৃথিবীকে বলয়ের আকারে বেষ্টন করে আছে, তাকে বায়ুচাপ বলয় বলে। যেমন- নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়, মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় ইত্যাদি।
- বায়ুর উচ্চচাপ (High pressure) ও নিম্নচাপ (Low pressure) বলতে কী বাোঝাো ?
উঃ- ভূপৃষ্ঠে বায়ুচাপের ক্ষেত্রে দুটি অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা যায়। যথা
(i) উচ্চচাপ : কোনাো জায়গায় বায়ুর চাপ তার চারিদিকের বায়ুর চাপের চেয়ে যদি বেশি হয়, তাহলে সেই জায়গার বায়ুর চাপকে উচ্চচাপ বলা হয়।
(ii) নিম্নচাপ : কোনাো জায়গার বায়ুর চাপ তার চারিদিকের বায়ুর চাপের চেয়ে যদি কম হয়, তাহলে সেই জায়গার বায়ুর চাপকে নিম্নচাপ বলে।
- নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডালড্রামস (Doldrum) কাকে বলে ?
উঃ- নিরক্ষীয় অঞ্চলের উন্ন, জলীয় বাষ্পপূর্ণ হালকা বা নিম্নচাপযুক্ত বলে সাোজা উপরের দিকে উঠে যাওয়ার এখানে বায়ুর ঊর্ধ্বমুখী স্রোত লক্ষ করা যায়। ফলে, এই অঞলে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বায়ুপ্রবাহ হয় না। তাই এখানকার বায়ুমণ্ডলে সবসময় শান্তভাব বিরাজ করে বলে একে ‘নিরক্ষীয় শান্তবলয়’ বা ‘ডাোল ড্রামস’ বলে
- অশ্ব অক্ষাংশ (Horse latitude) কাকে বলে ?
উ:- ও দক্ষিণ গাোলার্ধের ক্রান্তীয় অঞল (25° –35° উ. ও দ.) অশ্ব অক্ষাংশ নামে পরিচিত। প্রাচীন কালে পালতাোলা জাহাজের যুগে ইউরাোপ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমেরিকা ও পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে পাড়ি দেওয়া জাহাজগুলি ককটীয় ও মকরীয় শান্তবলয়ে এসে গতিহীন হয়ে পড়ত। এই অবস্থায় জাহাজের ভার কমাতে এবং পানীয় জল ও খাবারের সংকট এড়াতে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আনা কিছু ঘাোড়াকে আটলান্টিক মহাসাগরের জলে ফেলে দেওয়া হত। এই কারণে উভয় গাোলার্ধের ক্রান্তীয় অঞ্চল অশ্ব অক্ষাংশ নামে পরিচিত।
- কেন্দ্র বহির্মুখী বল (Centrifugal force) কাকে বলে ?
উঃ- পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে অবিরাম আবর্তন করায় পৃথিবীর কেন্দ্রে একপ্রকার দিকবিক্ষেপক বলের উদ্ভব হয়, যা সব কিছুকে বাইরের দিকে ছিটকে দেয়। এই দিকবিক্ষেপক বলকেই কেন্দ্র বহির্মুখী বল বলে।
- কোরিওলিস বল (coriolis force) কী ?
উঃ- ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে অনুভূমিকভাবে প্রবাহিত বায়ু পৃথিবীর আবর্তন গতির দ্বারা বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। ফরাসি পদার্থবিদ গ্যাসপার দ্য কোরিয়াোলিস (1792-1843) পৃথিবীর আবর্তনজনিত কারণে উদ্ভূতদিকবিক্ষেপক শক্তিকে চিহ্নিত করায় তাঁর নামানুসারে একে কোরিয়াোলিস বল বলা হয়। এই বলের প্রভাবে বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত প্রভৃতি উত্তর গাোলার্ধে ডানদিকে ও দক্ষিণ গাোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায় ।
- ‘ফেরেলের সূত্র’ (Ferrel’s Law) কী ?
উঃ- পৃথিবীর আকৃতি ও আবর্তন গতির জন্য এবং আবর্তন গতির বেগ সর্বত্র সমান না-হওয়ার জন্য বায়ু সাোজা পথে প্রবাহিত না-হয়ে উত্তর গাোলার্ধে ডানদিকে ও দক্ষিণ গাোলার্ধে বামদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়। বায়ুপ্রবাহের দিক সংক্রান্ত এই নিয়মটি বৈজ্ঞানিক ফেরেল আবিষ্কার করেন বলে এটি ‘ফেরেলের সূত্র’ নামে পরিচিত।
- বাইস ব্যালট সূত্র’ (Buy’s Ballot’s Law) কাকে বলে ?
উঃ- আবহবিদ বাইস ব্যালট 1857 খ্রিস্টাব্দে বায়ুপ্রবাহ ও বায়ুচাপের পার্থক্যের মধ্যে সম্পর্ক উল্লেখ করেন। তাঁর মতে উত্তর গাোলার্ধে বায়ু যে-দিক থেকে প্রবাহিত হয় সেইদিকে পিছন ফিরে দাঁড়ালে ডানদিকের বায়ুর চাপ বামদিকের থেকে বেশি হয়। দক্ষিণ গাোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থা দেখা যায়। এটিই ‘বাইস ব্যালট সূত্র নামে পরিচিত।
- নিয়ত বায়ু (Planetary wind) কাকে বলে ?
উঃ- যে-বায়ু সারাবছর ধরে নিয়মিতভাবে একটি নির্দিষ্ট উচ্চচাপ বলয় থেকে আর-একটি নির্দিষ্ট নিম্নচাপ বলয়ের দিকে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয়, তাকে নিয়ত বায়ু বলে। নিয়ত বায়ু তিন ধরনের, যথা— আয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু ও মেরু বায়ু।
- আয়ন বায়ু (Trade wind) কাকে বলে ?
উঃ- ককটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় (25°-35° উত্তর ও দক্ষিণ) থেকে সারাবছর ধরে যে বায়ু প্রায় নিয়মিতভাবে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের (5–10° অক্ষাংশ) দিকে প্রবাহিত হয়, তাকে আয়ন বায়ু বলে।
- আয়ন বায়ুকে ‘বাণিজ্য বায়ু’ (Trade wind) বলে কেন ?
উঃ- প্রাচীন কালে পালতাোলা জাহাজগুলি সম্পূর্ণভাবে আয়ন বায়ুর ওপর নির্ভর করে যাতায়াত করত। ক্রান্তীয় অঞলের মধ্যবর্তী দেশসমূহে জলপথে বাণিজ্য এই বায়ুর সাহায্যে চালানাো হত বলে এই বায়ুকে বাণিজ্য
- ITCZ কাকে বলে ?
উঃ- নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের কাছে উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু কেন্দ্রাভিমুখী হয়ে মিলিত হয়। এই দুই আয়ন বায়ুর সীমানার মধ্যবর্তী পরিবর্তনশীল অলকে ইনটারট্রপিক্যাল কনভারজেন্স জোন বা নিরক্ষীয় আন্তঃঅভিসরণ অল বলে।
- পশ্চিমা বায়ু (Westerlies wind) কাকে বলে ?
উঃ- কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় (25–35° উত্তর ও দক্ষিণ) থেকে যে-বায়ু যথাক্রমে সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের (60°-70° উত্তর ও দক্ষিণ) দিকে সারাবছর ধরে প্রবাহিত হয়, তাকে পশ্চিমা বায়ু বলে।
- ‘গর্জনশীল চল্লিশা’ (Roaring Forties) কী ?
উঃ- দক্ষিণ গাোলার্ধে স্থলভাগের তুলনায় জলভাগ বেশি থাকায় বায়ু বাধাহীনভাবে জোরে প্রবাহিত হয়। 40° দক্ষিণ অক্ষরেখা বরাবর পশ্চিম থেকে পূর্বে সশব্দে পশ্চিমা বায়ুর প্রবাহিত হওয়াকে ‘গর্জনশীল চল্লিশা বলে।
- তীক্ষ্ণ চিৎকারকারী ষাট (Screaming sixties) কাকে বলে ?
উঃ- পশ্চিমা বায়ু দক্ষিণ গাোলার্ধে জলভাগের ওপর দিয়ে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় 60° দক্ষিণ অক্ষরেখা বরাবর তীক্ষ শব্দে ।
- মেরু বায়ু (Polar wind) কাকে বলে ?
উঃ- দুই গাোলার্ধে দুই মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় (80°-90° উত্তর ও দক্ষিণ) থেকে যে শুষ্ক ও শীতল বায়ু মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের (60-70° উত্তর ও দক্ষিণ) দিকে সারাবছর ধরে প্রবাহিত হয়, তাকে মেরু বায়ু বলে।
- মেরু বায়ু শীতল কেন হয় ?
উঃ- মেরু বায়ু মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। পৃথিবীর দুই মেরুদেশে সূর্যরশ্মি সারাবছরই অত্যন্ত তির্যকভাবে পড়ায় উন্নতা প্রায় হিমাঙ্কের নীচে থাকে ও মেরু অঞ্চলে মহাদেশীয় হিমবাহের অবস্থানের জন্য মের বায় শীতল প্রকৃতির হয়।
- বায়ুচাপ বলয়ের স্থান পরিবর্তন হয় কেন ?
উঃ- সূর্যকে সামনে রেখে পৃথিবী 66° কোণে নিজের অক্ষের ওপর হেলে আবর্তনের সময় যখন উত্তর গাোলার্ধ সূর্যের সামনে আসে তখন কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ার ফলে পৃথিবীর চাপ বলয়গুলি উত্তর দিকে সামান্য সরে যায় এবং যখন দক্ষিণ গাোলার্ধ সূর্যের সামনে আসে তখন মকরক্রান্তি রেখার ওপর সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ার ফলে চাপ বলয়গুলি সামান্য দক্ষিণ দিকে সরে আসে। সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের জন্যই চাপ বলয়গলির থানপরিবর্তন ঘটে।
- রবিমার্গ কাকে বলে ?
উঃ- সূর্য নিরক্ষরেখার ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয়, আবার উত্তরায়ণের সময় কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর এবং দক্ষিণায়নের সময় মকরক্রান্তি রেখার ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয়, ফলে সূর্যের আপাত অবস্থানের সামান্য পরিবর্তন ঘটে। সূর্যের বার্ষিক অবস্থানের পরিবর্তন
- পাোর্তুগাল, স্পেন, ইটালি ও ফ্রান্সে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় কেন ?
উঃ- সূর্যের দক্ষিণায়নের সময় কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়টি দক্ষিণ দিকে সরে যাওয়ায় ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চল এই উচ্চচাপ বলয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে। ফলে শীতকালে এই অংশে মহাসাগরের উপর দিয়ে বয়ে আসা। দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে যথেষ্ট বৃষ্টিপাত হয়।। এই কারণে পাোর্তুগাল, স্পেন, ইটালি ও ফ্রান্সে শীতকালে। বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।
- সাময়িক বায়ু (Seasonal wind) কাকে বলে ?
উঃ- যে-বায়ু সর্বদা প্রবাহিত না-হয়ে দিনের কোনাো নির্দিষ্ট সময়ে বা বছরের কোনাো নির্দিষ্ট ঋতুতে প্রবাহিত হয়, তাকে সাময়িক বায়ু বলে। যেমন—স্থল বায়ু, সমুদ্র বায়ু, মৌসুমি বায়ু ইত্যাদি।
- সমুদ্র বায়ু (Sea Breeze) কাকে বলে ?
উঃ- দিনের বেলা সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে যে-বায়ুপ্রবাহ হয়, তাকে সমুদ্র বায়ু বলে। সূর্যের তাপে থলভাগ জলভাগের তুলনায় দ্রুত উত্তপ্ত হওয়ায় স্থলভাগের বায়ু উয় ও প্রসারিত হয়ে উপরে উঠে যায়, ফলে সেই শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য সমুদ্রের উপর থেকে অপেক্ষাকৃত শীতল বায়ু স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়।
- স্থল বায়ু (Land Breeze) কাকে বলে ?
উঃ- সূর্যাস্তের পর স্থলভাগ থেকে যে-বায়ু সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়, তাকে স্থল বায়ু বলে। সন্ধের পর স্থলভাগ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়। ফলে সেখানকার বায়ুর চাপ বৃদ্ধি পায়, কিন্তু সমুদ্রের উপরের বায়ু তখনও স্থলভাগের তুলনায় উয় থাকে বলে সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। ফলে রাতের বেলা স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে এই বায়ু প্রবাহিত হয়।
- গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু (Summer Monsoon) কাকে বলে ?
উঃ- গ্রীষ্মকালে মহাদেশের অভ্যন্তরভাগ সূর্যের তাপে দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এইসময় ভারত মহাসাগরের জল তুলনামূলকভাবে শীতল থাকায় সেখানকার বায়ুতে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়। ফলে গ্রীষ্মকালে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। একে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু বলা হয়।
- শীতকালীন মৌসুমি বায়ু (Winter Monsoon) কাকে বলে ?
উঃ- শীতকালে মহাদেশের অভ্যন্তরভাগ তাড়াতাড়ি তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়ে পড়ে এবং সেখানে বায়ুর উচ্চচাপ তৈরি হয়। এই সময় ভারত মহাসাগরের জল স্থলভাগের তুলনায় উম্ন থাকায় সেখানে বায়ুর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। ফলে শীতকালে স্থলভাগ থেকে জলভাগের দিকে বায়ু প্রবাহিত হয়। একে শীতকালীন মৌসুমি বায়ু বলে
- অ্যানাবেটিক বায়ু (Anabetic wind) কাকে বলে ?
উঃ- দিনের বেলায় সূর্যের তাপে পার্বত্য উপত্যকার দু-পাশের ঢালের উপরের বায়ু যে-পরিমাণ উম্ন হয়, উপত্যকার মাঝের অংশের উপরিস্থিত বায়ু ততটা উয় হয় না। ফলে সেখানে তুলনামূলকভাবে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় এবং তাপমাত্রাও কম থাকে। এখান থেকে উচ্চচাপের বায়ু পর্বতের ঢাল বরাবর নীচ থেকে উপরের দিকে। উঠতে থাকে। এই বায়ু হল উপত্যকা বায়ু, যার আর এক নাম অ্যানাবেটিক বায়ু।
- ক্যাটাবেটিক বায়ু (Katabetic wind) কাকে বলে ?
উঃ- রাত্রিবেলায় তাড়াতাড়ি তাপ বিকিরণ করে উপত্যকার দু-পাশের উপরিস্থিত বায়ু ঠান্ডা হয়ে পড়ে। ফলে পর্বতের ঢাল বরাবর এই উচ্চচাপের ভারী বায়ু নীচের দিকে নামতে শুরু করে এবং উপত্যকায় অবস্থান করে এই বায়ু হল পার্বত্য বায়ু, যার আর-এক নাম ক্যাটাবেটিক বায়ু।
- স্থানীয় বায়ু (Local wind) কাকে বলে ?
উঃ- ভূপৃষ্ঠের কোনাো কোনাো এলাকায় বছরের নির্দিষ্ট সময়ে স্থানীয় কারণে তাপ বা চাপের পার্থক্য ঘটলে যে-বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়, তাকে স্থানীয় বায়ু বলে। উদাহরণ খামসিন, চিনুক, লু, বাোরা।
- আকস্মিক বায়ু (Variable wind) কাকে বলে ?
উঃ- ভূপৃষ্ঠের কোনাো অল্পপরিসর স্থানে বায়ুর চাপ হঠাৎ অত্যন্ত হ্রাস ও বৃদ্ধি পেলে বায়ু প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়, একে আকস্মিক বায়ু বলে। যেমন- ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাত।
- সমচাপরেখা বা সমপ্রেষরেখা (Isobar) কাকে বলে ?
উঃ- ভূপৃষ্ঠের যেসব জায়গায় বায়ুর চাপ সমান, সেইসব জায়গাকে যে-কাল্পনিক রেখার সাহায্যে যাোগ করা হয় তাকে সমচাপরেখা বা সমপ্রেষরেখা বলে। অর্থাৎ, সমান চাপবিশিষ্ট স্থানগুলিকে যে- কাল্পনিক রেখা দিয়ে দেখানাো হয় তাকে সমচাপ রেখা বলা হয়। ভূপৃষ্ঠের উচ্চতার সঙ্গে বায়ুচাপ বিপরীত সম্পর্কযুক্ত, অর্থাৎ, উচ্চতা বাড়লে বায়ুচাপ কমতে থাকে। উচ্চতা বাড়লে বায়ুস্তরের গভীরতা কমে, ফলে চাপও কমে। সমুদ্র সমতলে বায়ুচাপ 1,013.25 মিলিবার হলেও প্রতি 900 ফুট উচ্চতায় 34 মিলিবার করে বায়ুচাপ কমতে থাকে।
- দুটি স্থানীয় বায়ুর নাম ও অবস্থান লেখা ?
উঃ- একটি শুষ্ক ও উয় স্থানীয় বায়ু হল চিনুক। উত্তর আমেরিকার রকি পার্বত্য অঞলের পূর্ব ঢালে এই বায়ু প্রবাহিত হয়। একটি শীতল ও শুষ্ক স্থানীয় বায়ু হল বাোরা। আল্পস পর্বতের দক্ষিণ ঢাল বেয়ে নেমে অ্যাড্রিয়াটিক। উপকূলবর্তী অঞ্চলের ওপর দিয়ে এই বায়ু প্রবাহিত হয়। অতিরিক্ত শীতলতার জন্য এর প্রভাবে অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলবর্তী অঞ্চলে জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। একটি শুষ্ক ও উয় স্থানীয় বায়ু হল চিনুক। উত্তর আমেরিকার রকি পার্বত্য অঞ্চলের পূর্ব ঢালে এই বায়ু প্রবাহিত হয় একটি শীতল ও শুষ্ক স্থানীয় বায়ু হল বাোরা। আল্পস পর্বতের দক্ষিণ ঢাল বেয়ে নেমে অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলবর্তী অঞ্চলের ওপর দিয়ে এই বায়ু প্রবাহিত হয়। অতিরিক্ত শীতলতার জন্য এর প্রভাবে অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলবর্তী অঞ্চলে জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।
- ঘূর্ণবাত (Cyclone) কাকে বলে ?
উঃ- কোনাো অল্প পরিসর জায়গায় বায়ুর চাপ হঠাৎ কমে গেলে কেন্দ্রে নিম্নচাপ তৈরি হয় এবং বাইরের দিকে কোনাো জায়গায় বায়ুর উন্নতা হঠাৎ করে কমে গেলে বায়ুর চাপ বেড়ে যায়। তখন কেন্দ্রে উচ্চচাপ আর বাইরের দিকে নিম্নচাপ উচ্চচাপ কেন্দ্ৰবাহির্মুখী বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় বায়ু কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে বেরিয়ে যায় । একে প্রতীপ ঘূর্ণবাত বলে। সাধারণত উচ্চ অক্ষাংশে এই প্রতীপ ঘূর্ণবাতের নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাত সাধারণত মেঘমুক্ত, শুষ্ক । আবহাওয়া নির্দেশ করে। রোদ ঝলমলে ।